সোনাই মধুরবন্দি গ্রামে নৌকাডুবি ঘটনা নিয়ে রাজনীতি?

সোনাই মধুরবন্দি গ্রামে নৌকাডুবি ঘটনা নিয়ে রাজনীতি? সড়ক নির্মাণে বিভিন্ন দূর্ণীতির অভিযোগের তীর ছোড়াছুড়িতে সরগরম সোনাই।

12th June 2024, Wednesday:
গত ৩ জুন সংঘটিত নৌকা ডুবির ঘটনার নতুন ও প্রাক্তন বিধায়কের বাক যুদ্ধ অব্যাহত। মধুরবন্দী গ্রামের সড়ক নির্মাণে দুর্নীতি নিয়ে সরগরম হয়ে ওঠেছে সোনাই। সোনাইর বিধায়ক করিম উদ্দিন বড়ভুইয়া গত ৭জুন শুক্রবার পূর্ব সোনাইর মধুরবন্দী গ্রামে নৌকা ডুবিতে মৃত্যু হওয়া ৬ জনের পরিবারের সাথে দেখা করে সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে জনসমক্ষে প্রাক্তন বিধায়ক আমিনুল হক লস্করের বিরুদ্ধে সড়ক নির্মাণে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনেন।

এবং মামলার হুমকি দেন। এনিয়ে সম্প্রতি সোনাইর বিধায়ক করিম উদ্দিন বড়ভুইয়া ওরফে সাজু দুর্নীতির তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশে মামলা দায়ের করেছেন। টাকা আত্মসাৎ করার ফলে সড়ক নির্মাণ না হওয়ায় নৌকায় পার হতে গিয়ে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করেছিলেন বিধায়ক। এছাড়া সোনাই উন্নয়ন খণ্ডে বিগত দিনে বহু প্রকল্পে কেলেঙ্কারি হয়েছে। এসব অভিযোগের তীর প্রাক্তন বিধায়ক আমিনুল হক লস্করের দিকে তুলেছিলেন সাজু। যদিও মামলায় কারো নাম উল্লেখ করেন নি সাজু। এবিষয়ে সাজুর বক্তব্য ছিল, কান টানলে মাথা আসবেই। মঙ্গলবার এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সাংবাদিক সম্মেলন করে সোনাই বিধায়ককে মিথ্যাচার আখ্যা দিয়ে পাল্টা মন্তব্য করেছিলেন আমিনুল। এছাড়া গবিন্দনগর-মধুরবন্দী গ্রাম সংযোগকারী রাস্তার নামকরণ নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন ও করেন তিনি। আজ বুধবার শিলডুবিতে পাল্টা আরেকটি সাংবাদিক সম্মেলন করে আমিনুল হক লস্করকে এক হাত নিলো বিধায়ক করিম উদ্দিনের বাহিনী। তাঁরা বলেন, প্রাক্তন বিধায়ক সোনাইকে দুর্নীতির আখড়া বানিয়েছিলেন। আর এসবকে এখন আড়াল করতে মিথ্যা আবোলতাবোল বলছেন। বিগত দিনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি তুলেন বিধায়ক সাজুর টিম। এদিন সোনাইর প্রাক্তন বিধায়ক তথা আসামের প্রাক্তন ডেপুটি স্পীকারকে স্বচ্ছ রাজনীতি করার আহবান জানান। রাজনীতিতে সব কিছু সম্ভব হলেও কিছু যায়গা নিয়ে রাজনীতি করা দূর্ভাগ্যজনক। দূর্ণীতি সোনাইর বিধায়ক এখন এপর্যন্ত করেন নি? সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রতিনিধিরা বলেন, প্রাক্তন ডেপুটি স্পীকারের আমলে তাদের এলাকায় বিভিন্ন কাজের টাকা বিধায়কের ভাগিনাদের ভেণ্ডারের মাধ্যেমে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। তারা এগুলো কাজ শেষ করতে পারেন নি। সেই দূর্ণীতির জন্যই সোনাইয়ে বিগত ৩ বছর ধরে এম,জি,এন,আর,ই,জি,এসের কাজ বন্ধ রয়েছে। তদন্তের আওতায় রয়েছে সবকটি কাজ। তদন্ত ও হচ্ছে না, নতুন প্রকল্পও নেওয়া হচ্ছে না। নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নের নির্দেশ সরকারের থাকলে ও কোনো নতুন প্রকল্পে স্বাক্ষর করছেন না কাছাড়ের জেলাশাসক। এমতাবস্থায় হাজার হাজার শ্রমিক সন্ধিহান। জেলাশাসকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ব্যাক্ত করেন বক্তারা। তারা বলেন, কাছাড়ের জেলা শাসকের কাছে বন্যার জলে ডুবে মৃত্যু হওয়া ব্যাক্তিরা শুধুমাত্র নম্বর হিসাবে পরিগনিত। সোনাইয়ে ৮জনের মৃত্যু হলো। আজ অবধি এত বড় মাপের ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পর ও জেলাশাসক কোনো ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন নি? প্রাক্তন জেলা শাসক কীর্তি জল্লি বন্যার সময়ে নৌকায়, ট্রাকে চেপে বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে পীড়িত মানুষের কাছে পৌঁছে ছিলেন। যাই হোক, তিনি তো দূরে কিন্তু সোনাইর সার্কেল অফিসার ও এবিষয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন। পরে অবশ্য তিনি নিজের ভুল স্বীকার করেন।
এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সোনাই ইউডিএফের সভাপতি খালিদ হাসান লস্কর, সম্পাদক জাকির হোসেন লস্কর, সোনাই আঞ্চলিক পঞ্চায়েতের সভাপতির প্রতিনিধি জুনুবাবু লস্কর, সোনাই পুর সদস্য নূর আহমেদ বড়ভুইয়া ও সাহারুল লস্কর, প্রতিনিধি আনসারুল হক লস্কর, প্রাক্তন এপি সদস্য যথাক্রমে সজীব লস্কর, মুন্না মজুমদার, হিরন লস্কর, রাঘু বড়লস্কর, মঙ্গলপুর বোয়ালি হাওর সমবায়ের চেয়ারম্যান শাহিন লস্কর, যুব ইউডিএফের মওলানা নাজির হোসেন মজুমদার, সুফিয়ান লস্কর, মেহবুব লস্কর, রফিকুল বড়ভুইয়া প্রমুখ। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ মোহনপুর জিপির প্রাক্তন সভাপতির প্রতিনিধি মজিবুর রহমান, এম মকসুদ আহমেদ বড়ভুইয়া, সেকন বড়ভুইয়া, হাফিজ আব্দুল হক, সিরাজ আহমেদ প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Skip to content