সোনাই ব্লক কংগ্রেস বনাম আমিনুল কংগ্রেসের গোপন যুদ্ধে

সোনাইয়ে কংগ্রেসের সাংগঠনিক সভা অনুষ্ঠিত। সুর্যকান্তের হাত ধরে নির্বাচনী কার্য্যালয়ের উদ্ভোদন। একই সময়ে সোনাইয়ে কংগ্রেসের দুটি সভা। সোনাই ব্লক কংগ্রেস বনাম আমিনুল কংগ্রেসের গোপন যুদ্ধে কংগ্রেসে ফাটলের সম্ভাবনা।

কংগ্রেসের সভায় সদ্য কংগ্রেসে যোগদান করা আমিনুল বিরুধী ঈঙ্গিত সোনাই ব্লক কংগ্রেসের সভায়।

সোনাইয়ে দলীয় কর্মীদের নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যা ৭ ঘটিকায় এক মত বিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সভার শুরুতে স্বাগত এবং উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেন সোনাই ব্লক কংগ্রেস সভাপতি আক্তার হুসেন বড়ভুইয়া অর্ফে আক্কা।

আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ভোটের রূপরেখা তৈরি করতে সভায় প্রত্যেক মণ্ডল কমিটির সভাপতির মতামত নেওয়া হয় এবং মণ্ডল ভিত্তিক সভা আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে ব্লক কংগ্রেস সভাপতি আক্তার হুসেন বড়ভুইয়া আগামী নির্বাচনে দলীয় কর্মীদের এক জোট হয়ে নির্বাচনে ঝাপিয়ে পড়ার আহবান জানান। এদিন সভা চলাকালীন সময়ে উপস্থিত সভাপতির কাছে খবর আসে আসাম প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ভুপেন বরা সহ দলীয় উচ্চপদস্থ নেতৃবৃন্দ সভায় আসছেন তবে রাত ৯ টা বাজলে ও উপস্থিত হন নি ভুপেন।

এদিকে সদ্য কংগ্রেস দলে যোগদান করা সোনাইর প্রাক্তন বিধায়ক আমিনুল হক লস্করের বাড়িতে ও একই সময়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সে সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস সভাপতি ভুপেন। কংগ্রেস নেতা ইজাজ হুসেন লস্করের বক্তব্যে আমিনুল বিরুধী ঈঙ্গিত পরিলক্ষিত হয়েছে। মধ্য সোনাই জিলা পরিষদ সদস্যের দুবারের প্রতিনিধি তথা প্রাক্তন সোনাই যুব কংগ্রেস সভাপতি ইজাজ হুসেন লস্কর বলেন,

জনৈক ব্যাক্তি সদ্য কংগ্রেস দলে যোগদান করেছেন যার বিজেপির উচ্চপর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে গোপন আতাত রয়েছে। তিনি কংগ্রেস দলের কিভাবে ভোট কমানো যায় সেদিকে কাজ করে যাচ্ছেন। যিনি বিভিন্ন কৌশলে সোনাইয়ে কংগ্রেসকে দুর্বল করার অপপ্রয়াস করছেন।

কিভাবে নেতা কর্মীদের মধ্যে বিভাজনের সৃষ্টি করা যায়, তাহলে সোনাইয়ে লভি সৃষ্টি হবে এবং লভিবাজিতে সোনাইয়ে কংগ্রেস প্রার্থীর ক্ষতি হবে। তিনি আরো জানান, আমরা অঙ্কের জন্য কংগ্রেস করিনা অঙ্ক মিললেও কংগ্রেস করি আর অঙ্ক না মিললেও কংগ্রেস করি।

বিগত দিনে যারা কংগ্রেসের কর্মীদের হেনস্তা করেছিল তারাই আবার কংগ্রেসের হর্তাকর্তা। কংগ্রেসের দুর্দিনে যারা পাশে ছিল তাদেরকে সম্মান দিতে হবে এবং বিভাজনের রাজনীতি না করে কংগ্রেসের নীতি মেনে চলে কাজ করলে সোনাই কংগ্রেস স্বাগত জানাবে। কিন্তু সদ্য কংগ্রেসে এসে আমাদের নেতাকে আমাদের কর্মীদের ডমিনেট করলে তাহা কখনো মানা যাবে না।

বক্তব্য রাখেন সদ্য কংগ্রেসে যোগদান করা তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যিক সম্পাদক ড. শান্তি কুমার সিংহ। তিনি বলেন, বিজেপি সরকার এবার সরকার গঠন করলে হয়তো আর কোনোদিন নির্বাচন হবে না। রাজা প্রজার শাসন শুরু হবে। রাম রাজ্যের নামে স্বৈরাচারী শাসন শুরু হতে পারে। যাহা ইতিমধ্যে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে কয়েকজন নেতা এর ইঙ্গিত দিয়েছেন। ভারতের সংবিধান বদলিয়ে ভারতকে পঙ্গু করার চেষ্টা করছে বর্তমান সরকার তাই এবারের নির্বাচন খুব গুরুত্বপূর্ণ ও সংবিধান রক্ষার নির্বাচন।

সভায় এর মধ্যে উপস্থিত হন শিলচর লোকসভা আসনের কংগ্রেসের মনোনীত প্রার্থী সূর্যকান্ত সরকার, তিনি বর্তমান সরকারকে তুলোধুনো করে বক্তব্য রাখেন। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সুর্যকান্ত লোকসভা নির্বাচনের ইস্তাহার তুলে ধরে বলেন,

কংগ্রেস যা করেছে বিগত দিনে বিজেপি সেই প্রকল্প গুলোকে রিফারবিস করছে। কংগ্রেস দল বিগত দিনে দেশের আনাচে কানাচে স্কুল কলেজ তৈরি করেছে, সেই স্কুল কলেজগুলি রক্ষণাবেক্ষণ না করে বিজেপি সরকার হাজার হাজার স্কুল কলেজ বন্ধ করে দিয়েছে। কংগ্রেস সরকার এনেছিল ফুড সিকিউরিটি বিল, ফাইনান্সিয়াল ইনক্লুশন ইত্যাদি।

তিনি আসন্ন নির্বাচনে বিবেক ভোট প্রদানের আর্জি জানান যাতে ভারতের সংবিধান রক্ষা হয়। এবং বিজেপিকে প্রতিহত করতে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে তাকে জয়ী করার আহবান জানান।

এছাড়া সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা সংখ্যালঘু বিভাগের সভাপতি আন্সারুল হক বড়লস্কর, জেলা কংগ্রেসের সম্পাদক সাবির আহমেদ বড়লস্কর, সোনাই যুব কংগ্রেস সভাপতি রাকিব হুসেন মজুমদার প্রমুখ। এদিন সভা শেষে, সোনাইয়ের হাসপাতাল রোডে নির্বাচনী কার্য্যালয়ের উদ্ভোদন করেন সুর্যকান্ত সরকার সহ কংগ্রেসের বিভিন্ন স্তরের কর্মীরা।

 

সাবির মজুমদার,  দ্যা বরাক লাইভ ২৪

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Skip to content